Breaking News

বাস্তবতা

 জীবন কখনো কখনো স্বপ্নের মতো ছেয়ে আসে কিছু মূহুর্ত। যা কখনো বাস্তবতা মেনে নেয় নাহ। আবার অনেকেই সেই স্বপ্নটাকে সত্যি করার জন্য কঠোরভাবে পরিশ্রম করে থাকে। সেই যুদ্ধে অনেকেই হয় জয়ী আবার অনেকেই হয় পরাজয়ী। এমন কিছু অকল্পনীয় কথা নিয়েই আমার লেখা। ছেলেটির নাম রিফাত। খুব ভালবাসতো আফরোজা নামের একটি মেয়েকে। কিন্তু কখনো বলা হয়নি তাকে। এর কারনেই বলেনি যদি তাদের ফ্রেন্ডসিপ নষ্ট হয়ে যায়। যাই হোক আসল কথায় ফিরে আসি। রিফাত মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির একটি ছেলে। রিফাতের দুই বোন এবং মা - বাবা নিয়েই গঠিত তার একটি ছোট্ট পরিবার। রিফাত ছিলো তাদের বোনের একমাত্র ছোট ভাই। তাই সবাই খুব ভাল বাসতো রিফাতকে। রিফাত সবে মাত্র চাকরিতে ঢুকলো। চাকরিটা হলো একটা মোবাইল কোম্পানীতে। স্যালারী প্রায় ৮০০০ টাকা। মোটামুটি ভাল ভাবেই চলছিলো পরিবারদের সাথে রিফাতের দিন গুলো। অন্যদিকে আফরোজা সে ছিলো খুবই রিচ (ধনী) ফ্যামিলির মেয়ে। তার দুই ছোট ভাই এবং বাবা -মাকে নিয়ে খুব ভাল ভাবেই কাটাচ্ছিল। আফরোজা ইন্টার মিডিয়েট কমপ্লিট করেছে। আচ্ছা রিফাত এবং আফরোজা একাসাথেই ক্লাস ৫ (Five) থেকে পড়ে আসছে। আসলে তারা খুব ভাল বন্দু। বন্দু বললে কম হয়ে যাবে তারা ছিলো বেস্ট ফ্রেন্ড। একজন কে ছাড়া অন্যজন একদমই অচল ছিলো তারা। এইভাবেই কাটছিলো তাদের দিন গুলো। 



                                    5 years After.....



তখন তাদের এস এস সি শেষ হয়ে গেছে। রিফাত অনেক বেশিই পছন্দ করতো আফরোজাকে। আফরোজাও করতো সেটা তার ভাব ভংগিতেই বুঝিতে দিতো। একদিন রিফাত তার মনের কথা বলেই ফেললো। 
___রোজা তোকে কিছু কথা বলার ছিলো 
___হ্যা বল। কি বলবি হ্যা যেনে রাখা ভাল রিফাত আদর করেই রোজা বলে ডাকতো আফরোজাকে। 
___ বুঝতে পারছি নাহ কথাটা শুনার পর তোর রিয়েকশন কি রকম হবে। তবুও বলি যেই কথাটা অনেক আগে থেকেই বলার ছিলো কিন্তু বলতে পারি নি। আজ যখন সময় হয়েছে সেই কথা বলার তাই এখন বলাটাই ভাল হবে আমি মনে করি।
 ____ উফফফফফ এত গুঁড়াইয়া না পেঁচাইয়া বলতো কি বলবি। 
___অনেক। কি????? দেখ রিফাত আমি বুঝতে পারছি তুই কি বলতে চাচ্ছিস। কিন্তু এটা কি কখনো পসিবল। ___হোয়াই নোট ( কেনো নাহ )
 ___তুই ভেবে দেখিস বলেই উঠে হাটা শুরু করে দিলো আফরোজা। অন্যদিকে রিফাত বসে বসে ভাবছে তাহলে কি ফ্রেন্ডসিপ এখানেই শেষ হয়ে গেলো। চিন্তা করছে মাথায় হাত দিয়ে। সেই দিনের মতো চলে গেলো দিনটা। তার প্রায় ৭-৮ দিন পর আফরোজা ফোন দিল রিফাতকে।
____ আছি আশে পাশেই। কেনো? 
____আজ বিকেল ৫ টায় একটু দেখা করতে পারবি 
____হ্যা। অবশ্যই। রিফাত তো খুব খুশি আফরোজার কথা শুনে। মনে মনে ভাবতে থাকে মনে হয় আজ আমার সেই খুশির দিন। এই ভেবেই দেখা করতে বের হলো রিফাত। রিফাত একটা রেস্টুরেন্ট এ বসে আছে। আর অপেক্ষা করছে আফরোজা কখন আসবে। কিছুক্ষন পর আফরোজার দেখা মিললো। কিন্তু সাথে এটা কে। 
___এতক্ষনে আসলি?
 ___হ্যা রে। পরিচয় করিয়ে দিই রিফাত ও আমার বয় ফ্রেন্ড আশিক। 
কথাটা শুনার পর রিফাত খুব বেশি আঘাত পেলো। 
___ হ্যালো রিফাত 
___এইতো বেশ। 
___আচ্ছা আমরা এখন উঠি রে। একটু সপিং এ যেতে হবে। (আফরোজা) _ঠিক আছে বায়।(রিফাত) রিফাত মাথা নিচু করে বসে আছে। তার চোখে পানি এসে পড়লো। এরকমটা তো কখনোই আশা করেনি রিফাত। যাই হোক এর কিছুদিন পর রিফাত যানতে পারে ঐ টা ছিলো টোটালি মিথ্যা সাজানো নাটক। কিন্তু ও কেনো এটা করলো সেটা তো যানতেই হবে। রিফাত আফরোজা কেই ফোন দিল 
___ মিথ্যে নাটকটা করার মানে কি?
 ___ মানে??
 ___ মানে খুব সোজা। কেনো এরকম করলে? তখন তুই থেকে সম্পর্কটা তুমিতে রুপান্তরিত হলো। 
___ইয়ে মানে রিফাত আমিও তোমাকে পছন্দ করি।কিন্তু এটা আমার ফ্যামিলি কখনোই মেনে নিবে নাহ।আর আমিও আমার ফ্যামিলির কথা অমান্য করতে পারবো নাহ। 
___ওহ তাই। আচ্ছা ঠিক আছে।
 ___ দেখো রিফাত আমার কিছু করার নেই। তোমার ফ্যামিলি আর আমার ফ্যামিলি আকাশ পাতাল তফাৎ। এটা কখনই সম্ভব না। আর তুমি যদি আমাদের স্ট্যাটাসে আসতে পারো তাহলে আমি রাজি আছি।বলেই ফোনটা কেটে দিলো। উপাশ থেকে কথাটা শুনা মাত্রই রিফাত কান্না করে দিলো। আর ভাবছে এটাই কি ছিলো তার ভালবাসা। তার কথা গুলো ভাবছ আর চোখের পানি ঝড়ছে। সেদিনের পর থেকে আফরোজা আর কখনই রিফাতের সাথে কন্টাক্ট করে নাই। মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলে / মেয়ে দের কি ভালবাসা পেতে নেই। তারা কি ইচ্ছা করেই এরকম হয়েছে। এরা কেনো বুঝেনা সব মানুষকেই আল্লাহ্ তা আলা সৃষ্টি করেছেন। মধ্যবিত্ত মানুষের কাউকে ভালবাসা কি অপরাধ??? জীবনে চলার জন্য বাস্তবতা মেনে চলতে হয়।বাস্তবতাই জীবনের একটি গল্প। 


কোন মন্তব্য নেই